• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৫৭ অপরাহ্ন

মন্তব্য : ছাত্রীর আত্মহত্যা ও শিক্ষকের উপর হামলা

মাহমুদ শরীফ / ৫৪ Time View
Update : বুধবার, ৯ আগস্ট, ২০২৩

আদরের প্রিয় সন্তান হারানোর ব্যথা অবশ্যই অনেক কষ্টের। এই অনাকংখিত মৃত্যু মেনে নেয়া আরো বেদনার। যার কলিজার টুকরা ঝরে গেছে তাকে সমবেদনা বা সহমর্মিতা জানানোর ভাষা জানা নেই।
পিতা মাতা সন্তান জন্ম দিয়ে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য পাঠায় শিক্ষকের কাছে। পিতা মাতার পরই শিক্ষকের মর্যাদা। এটি সন্তানের ন্যায় শিক্ষকের সাথে আত্মার সম্পর্ক। সে জন্য শিক্ষকদের সন্মানিত করা কর্তব্য। কেননা, সন্তান জন্মদাতা থেকে যেমন সম্পদের উত্তরাধিকার হয়, তেমনি শিক্ষক থেকেও জ্ঞানের অধিকারী হয় শিক্ষার্থীরা। সম্পদ পেয়ে ধনী আর জ্ঞান পেয়ে জ্ঞানী হবে এটাই সত্য। সব নবী রাসুলগন শিক্ষক হিসেবেই এসেছিলেন। সুতরাং ছাত্র শিক্ষক সম্পর্ক হবে সুন্দর। থাকবে অকৃত্রিম শ্রদ্ধা – স্নেহ আর ভালোবাসা। হবেন আপনজন।
আবার মনে রাখা দরকার, শাসন করা তারই সাজে সোহাগ করে যে। তবে অবশ্যই আদর্শবান শিক্ষক হতে হবে। শিক্ষক হওয়ার মত গুনাবলী অর্জন করতে হবে। ফাঁকিবাজী আর লেজুড়বৃত্তি পরিত্যাগও জরুরী। মানুষ হিসেবে শিক্ষার্থীদের গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে যেয়ে স্নেহ আর শাসন অযৌক্তিক নয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথায় “-ওরে সবুজ ওরে অবুঝ। ওরে আমার কাঁচা – আধ মরাদের ঘা মেরে তুই বাঁচা”।
কিন্তু একবারও কী কুমারখালীর সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী জিনিয়ার আত্মহত্যা নিয়ে আমরা গভীর ভাবে ভেবেছি? কী হচ্ছে এসব! তাহলে আমাদের গন্তব্য কোনদিকে চলেছে? স্কুলে মেয়েদের সিগারেট খাওয়া বা অন্য কোন অপরাধ করা, আবার ঐ দিন অনুপস্থিত প্রধান শিক্ষককে এভাবে চরম পর্যায়ের অসম্মানিত করা কতটুকু যৌক্তিক? আঘাত কিংবা মানুষিক নির্যাতন অপরাধ। সিগারেট খাওয়া কী অপরাধ নয়? পিতা মাতা আর শিক্ষক কেউই চান না বাচ্চারা খারাপ অন্যায় অপরাধমূলক কিছু করুক। বোদ্ধাগন কোন দিকে রায় দিবেন?
আবার শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রীদের ভিডিও ধারন এই তথ্যের কোন সত্যতা পায়নি এমন খবর গণমাধ্যমকর্মীরা প্রকাশ করছে। স্থানীয় একটি কু-চক্রী মহল মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন তথ্য ছড়িয়ে উস্কানী দিয়ে গোটা পরিস্থিতিকে ধ্বংসাত্বক করে তুলছে বলেও মনে হয় ।
কোন শিক্ষক দোষী হলে তদন্ত সাপেক্ষে শান্তি হোক এটার পক্ষে আমিও। আবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক বা সামাজিক ফায়দা সন্ধানীরা সুযোগ নিক এটাও কাম্য না। মৃতু ছাত্রীর জানাযায় শরীক হতে আসা ঐ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদের উপর হামলার নিন্দা ও ধিক্কার জানাই। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি দোষীদের।
মনে রাখতে হবে – ‘উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে’ চাপানোর ফন্দিবাজদের অভাব নেই। দেশে আইন আদালত আছে। শ্রদ্ধা রাখতে হবে তার প্রতি। আইন হাতে তুলে নেওয়াও অপরাধ। মনে রাখা জরুরি শিক্ষক সমাজ জাতি গড়ার কারিগর।
প্রকৃতপক্ষে শিক্ষকের শাসনের জন্যই জিনিয়ার মৃত্যু, নাকি অন্য কোন ব্যাপার আছে? আবার শিক্ষকের উপর হামলার ঘটনার মূল হোতা কারা ও এর মুল রহস্য কী? সংশ্লিষ্ট দপ্তর একদিন উৎঘাটন করবেই। আর সেই অপেক্ষায় রইলাম।6


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও সংবাদ