• সোমবার, ২২ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৫৬ পূর্বাহ্ন

শিক্ষক-কর্মচারীর বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলা

অনলাইন ডেক্স / ৯৮ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ১০ আগস্ট, ২০২৩

কুষ্টিয়ার কুমারখালীর কয়া ইউনিয়নের সুলতানপুর মাহতাবিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ধূমপান কাণ্ডে এক ছাত্রীর আত্মহত্যা ও প্রধান শিক্ষক আহতের ঘটনায় থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। বুধবার (৯ আগষ্ট) রাতে ছাত্রীর মা বাদী হয়ে তিনজন শিক্ষক ও একজন কর্মচারীকে আসামি করে আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলা করে। মামলা নম্বর -১৪।

আসামিরা হলেন – ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. মশিউর রহমান লাল্টু (৪৫), মো. ওলিউর রহমান অলিদ (৫০), মাহবুবা খাতুন (৪০) ও আয়া শিউলি খাতুন (৪২)। তাঁরা আত্ম গোপনে রয়েছে।

তবে প্রধান শিক্ষকের উপর হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত কোনো অভিযোগ পড়েনি। তিনি কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১০ আগষ্ট) সকালে এতথ্য নিশ্চিত করেন কুমারখালী থানার ওসি মো. আকিবুল ইসলাম। তিনি বলেন, ছাত্রীর মা বাদী হয়ে তিনজন শিক্ষক ও একজন কর্মচারীর বিরুদ্ধে আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলা করেছে। এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার নেই। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। শিক্ষকের ঘটনায় কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। এলাকার আইন – শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।

জানা গেছে, গত সোমবার দুপুরে বিদ্যালয়ের ছাদে উঠে পাঁচ ছাত্রী ধুমপান করে। বিষয়টি জানতে পেরে বিদ্যালয়ের আয়া শিউলি খাতুন দেখে শিক্ষকদের জানান। পরে সহকারি শিক্ষক মশিউর রহমান লাল্টু ও মো. ওলিউর রহমান এবং একজন শিউলি খাতুন তাঁদের ডেকে এনে ভিডিও ধারণ করেন এবং অভিভাবকদের জানানো, অনলাইনে ছড়ানো ও টিসি দেওয়ার হুমকি দেন। এরপর বিদ্যালয় ছুটি শেষে বাড়ি দুই ছাত্রী নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। স্থানীয়রা তাদের জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হলেও বিকেলে গলায় ফাঁস জিনিয়া খাতুন আত্মহত্যা করে। তিনি সুলতানপুর গ্রামের জিল্লুর রহমানের মেয়ে।

আরো জানা গেছে, গত মঙ্গলবার দুপুরে মরদেহ দেখতে যান বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ। সেসময় উৎসুক জনতা প্রধান শিক্ষককে মারধর করে আহত করে।

এবিষয়ে মামলার বাদী শান্তা খাতুন বলেন, ‘ আমার মেয়ে কোনোদিনও সিগারেট খায়নি। স্যাররা মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমার মেয়েকে দুইঘণ্টা ধরে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে। সেজন্য মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমি থানায় মামলা করেছি। আমি ন্যায় বিচার চাই।’

তিনি আরো বলেন, ‘ এখন পর্যন্ত বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ আমার খোঁজখবর নেয়নি। সেদিন হেডস্যার মরা দেখতে এসে হাসাহাসি করে বলেছিলেন স্যাররা কোনো অপরাধ করেনি। সেজন্য জনগণ তাকে মারেছে। এঘটনায় আমরা জড়িত নয়।

জানতে চাইলে আহত প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুর রশিদ মুঠোফোনে বলেন, তিনি ঘটনার সময় বিদ্যালয়ে ছিলেন না। পরে এ সংক্রান্ত অফিসিয়াল কাজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। সেজন্য ছাত্রীকে দেখতে যেতে বিলম্ব হয়েছিল। কিন্তু কেন তাঁর উপর হামলা চালানো হয়েছে, তা তিনি জানেন না। তাঁর ভাষ্য, মামলার বিষয় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি (পরিচালনা পরিষদ দেখছেন।

অপরদিকে গত বুধবার সকালে বিদ্যালয়ের প্রতিবাদ সভা করে জেলা বেসরকারি শিক্ষক সমিতি। সভায় শিক্ষকের উপর হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনার ২৪ ঘণ্টা আলটিমেটাম এবং বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় কুমারখালী বাসস্টান্ড এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষনা করেছিলেন। কিন্তু মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়নি।

এবিষয়ে জেলা বেসরকারি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সাইদুর রহমান বলেন, মামলার বিষয় বিদ্যালয় জানে। আহত শিক্ষক বেশি অসুস্থ। তারা জেলা পর্যায়ে আন্দোলন করবেন বলে আজকের কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।

বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মো. জিয়াউল ইসলাম স্বপন বলেন, ছাত্রীর আত্মহত্যা ও শিক্ষকের উপর হামলায় যারা জড়িত, সবাইকেই আইনের আওতায় আনা হবে। শিক্ষকের মামলাটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও সংবাদ