• সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬:২৪ পূর্বাহ্ন

তুচ্ছ ঘটনায় মসজিদের মোয়াজ্জিনকে পিটিয়ে হত্যা

নিজস্ব সংবাদদাতা / ৩৪ Time View
Update : শনিবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৩

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে প্রতিপক্ষের দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে আহত মসজিদের মোয়াজ্জেমের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। শনিবার ( ৭ অক্টোরব) সকাল ১১ টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। নিহত ব্যক্তির নাম মো. জামিরুল ইসলাম (৪০)। তিনি উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের ডাঁসা গ্রামের মৃত আয়নালের ছেলে। পেশায় ডাঁসা মধ্যপাড়া জামে মসজিদের মোয়াজ্জেম ও কৃষক ছিলেন।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, গত ২১ আগষ্ট ওই মোয়াজ্জেমের জমিতে কয়েকজন লোক নিয়ে ধানের চারা লাগাতে আসার কথা ছিল ডাঁসা গ্রামের দক্ষিণপাড়ার মৃত সুরত আলীর ছেলে মো. সাইফুল ইসলামের (৫০)। কিন্তু সাইফুল সেদিন ধান লাগাতে না আসেনি। এনিয়ে সেদিন সকালে দুজনের বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

এরপর ২২ আগষ্ট ওই মোয়াজ্জেম মাঠে নিজ জমিতে ধান কাটছিল। সেসময় একই এলাকার রব্বানী শেখের ছেলে বাবলুর রহমানের (৪০) হুকুমে সাইফুল ইসলাম, মো. আশিক (২২), মো. জোয়াদ আলী (৫০), মো. পলাশ হোসেন (২০), মানিক শেখ (২০), শরিফুল ইসলাম (৪৮) বাঁশের লাঠি, লোহার রড, হাতুড়িসহ বিভিন্ন প্রকার দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মোয়াজ্জেমের ওপর হামলা চালায়। এতে তিনি গুরুতর আহত হলে স্বজনরা প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতাল এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে শনিবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

জানা গেছে, এঘটনায় গত ২২ আগষ্ট ওই মোয়াজ্জেমের ভাই মো. সাবু শেখ বাদী হয়ে ৭ জনকে আসামী করে ১৪৩/১৪৭/৩২৩/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৫০৬/১১৪ পেনালকোডে মামলা করেন। মামলায় আসামি সাইফুল ইসলাম, আশিক ও জোয়াদ আলী কারাগারে রয়েছেন। অন্যান্য আসামিরা জামিনে মুক্ত রয়েছেন।

শনিবার দুপুরে সরেজমিন ডাঁসা গ্রামে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়,  স্বজনদের মাঝে শোকের মাতম চলছে। জামিনে থাকা আসামিরা ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। গ্রামের মোড়েমোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

এ সময় নিহত ব্যক্তির মেয়ে মিথিলা খাতুন বলেন, আমার বাবা নিষ্পাপ। ওরা বাবাকে হত্যা করেছে। আমি ওদের ফাঁসি চাই।

মামলার বাদী সাবু শেখ বলেন, ধান লাগানো নিয়ে ক্রোন্দলে বাবলুর রহমানের হুকুমে সাইফুল, আশিক, জোয়াদ, পলাশ, মানিক, শরিফুলরা আমার ভাইকে লাঠি, হাতুড়সহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমি মামলা করেছি। আসামিদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।

এবিষয়ে মামলার ১ নম্বর আসামির স্ত্রী নুরন্নাহার খাতুন জানান, সেদিন ধান লাগানো নিয়ে তাঁর স্বামীর সাথে একটু মারামারি হয়ছিল। কিন্তু এভাবে মারা যাবে তা তারা বুঝতে পারিনি। তাঁর ভাষ্য, মামলায় তাঁর স্বামী ও সন্তান জেলে রয়েছে। তিনি সামাজিকভাবে মীমাংসা করতে চান।

কুমারখালী থানার উপ পরিদর্শক ( এসআই) ও মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ধান লাগানো নিয়ে ক্রোন্দলের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত ব্যক্তি আজ মারা গেছেন। মামলায় সাতজন আসামির মধ্যে তিন জন কারাগারে রয়েছে। বাকীরা জামিনে মুক্ত রয়েছেন। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। আইন – শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও সংবাদ