• সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০১:৫১ পূর্বাহ্ন

কুমারখালীতে মদপানে তরুণ ও যুবকেরা জড়িয়ে পড়ছে

অনলাইন ডেক্স / ৪৭ Time View
Update : বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

কুষ্টিয়া কুমারখালীতে দেশীয় মদের দোকানে শর্ত ভঙ্গ করে মদ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে মদ বিক্রিতা সুঞ্জিত সিংহ রায় এর বিরুদ্ধে। এই দেশীয় মদের দোকান দেখা শুনা করেন ‘ভগো’ নামে এক সুঞ্জিত এর আত্মীয়। এখানে টাকা দিলেই মেলে মদ, লাগে না কোনো লাইসেন্স। বিধিমালা অনুযায়ী, মদ কেনাবেচা, পান, পরিবহনের ক্ষেত্রে লাইসেন্স, পারমিট ও পাস নিতে হবে। কিন্তু এই দোকানে কোন কিছুই লাগে না।

মুসলমানের দেশী মদ খাবার লাইসেন্স নেই। কিন্তু কুমারখালী দেশী মদের দোকানে প্রতিদিন শতশত মুসলিমরা মদ কেনেন। তাদের কোনো লাইসেন্স নেই। কোনরকম বাধা বিঘ্ন ছাড়াই তারা মদ কেনেন এবং তা দিয়ে নেশা করে মাতলামি করেন। প্রতি লাইসেন্স’র অনুকূলে মাসে ৭ লিটার দেশী মদ বরাদ্দ দেয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু সুঞ্জিত কুমার রায় এর বাইরেও অবৈধ পন্থায় বিপুল পরিমাণ দেশী মদ জোগাড় করেন। লাইসেন্সধারী মানুষের কাছে ছাড়া এই মদ বিক্রি করা নিষেধ থাকলেও দেশি মদের দোকানে লাইসেন্সধারী ছাড়াই নেশাখোরদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে মদ। এতে এলাকার কিশোর থেকে শুরু করে শিক্ষার্থী বৃদ্ধসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ মাদকের নেশায় আসক্ত হচ্ছে।

শুক্রবার, মহররম, শবে বরাত, ঈদে মিলাদুন্নবী, শবে কদর, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা এবং সরকার দেশি মদের দোকান বন্ধ রাখার বিধান রেখে বিধিমালা হয়েছে। কিন্তু ঈদ ও অন্যান্য উৎস আসলে দোকান বন্ধ তো দুরের কথা। রাত দিন এমনি কি তাদের বাড়ি থেকে মদ বিক্রি হয়। মদের দোকান বন্ধ হলে শুরু হয় বিলাকে মদ বিক্রি। অভিযোগ রয়েছে কুমারখালী পান বাজারে ও হরিজন পল্লীতে টাকা দিলেই মদ পাওয়া যায়।

দেশী মদের দোকানে কোন নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে বিক্রি হচ্ছে মদ। আর ওই মদের দোকানে ক্রেতারা সকাল থেকে মদ কিনতে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকে। ক্রেতাদের লাইন দেখলে মনে হয় এ যেন সাধারণ কোন পণ্য কেনার দোকান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, মদে বেশি পরিমাণ পানি মিশিয়ে বিক্রি হচ্ছে। এতে করে লাখ – লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সুঞ্জিত ও তার আত্মীয়া। নিঃস্ব হচ্ছে সাধারণ মানুষ ।

মদ্যপান করে এলাকার উঠতি বয়সের তরুণ ও যুবকেরা বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। স্থানীয়দের দাবি, অতি দ্রুত লাইসেন্স’র আড়ালে এই অবৈধ কারবার বন্ধ না করলে দিন দিন মাদকাসক্ত হয়ে পড়বে কুমারখালী এলাকার যুব সমাজ। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মদের কারবার করে সুঞ্জিত এর ভাগ্যের চাকা ঘুরে গেছে এবং কুমারখালী শহরে তার রয়েছে আলিশান বাড়ি ও গাড়ি।

সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কোন রকম নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে। যে লাইনে দাঁড়াচ্ছে তাকেই চাহিদা মত মদ দেওয়া হচ্ছে ।বেশিরভাগ ক্রেতাই নেশাখোর। নেশা করতেই তারা মদ কেনেন। সকাল থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত এমন কারবার চলছে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কাপুড়হাট ঘেঁষা পান বাজারে সরকার অনুমোদিত সুঞ্জিত কুমার রায়ের কুমারখালী দেশী মদের দোকানে (লাইসেন্স নম্বর-২)।

লাইনে দাঁড়িয়ে মদ কেনা দুই জনের সাথে কথা হলে তারা বলেন, প্রতি গ্লাস মদ ১ শ’ টাকায় বিক্রি হয়। লিটার প্রতি ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকায় বিক্রি করা হয়। কোয়াটার নিলে ছোট আড়াইশ গ্রাম কোমলপানীয়র বোতলে দেয়া হয়। হাফ লিটার বা এক দুই লিটার সবই কোমলপানীয়র বোতলে দেওয়া হয়। তবে তাদের অভিযোগ দেশী মদের ভেতর পানি মিশিয়ে বিক্রি করেন সুঞ্জিত ।

মদের দোকানে দায়িত্বে থাকা ভগোর সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলতে চাইলে, তিনি সুঞ্জিত এর সঙ্গে কথা বলতে বলেন। সুঞ্জিত এর কাছে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এই বিষয়ে কুষ্টিয়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক বেলাল হোসেন বলেন, এই ধরনের অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জনবল সংকটের কারণে সব সময় আমরা অভিযান করতে পারছিনা। মাদকের তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে সবাইকে জানান তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও সংবাদ