কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় আমন ধানের খেতে ব্যাপকভাবে মাজরা পোকা আক্রমণ করেছে। মাজরা পোকা দমনে ব্যর্থ হওয়ায় কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। পোকা দমন বা নিধনে উপজেলা কৃষি অফিস ধানখেতে পোকার আক্রমণ ঠেকাতে মাঠে-মাঠে আলোর ফাঁদ পাতা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের বেতবাড়িয়া, তারাপুর গ্ৰাম সহ কয়েকটি গ্রামের মাঠে গিয়ে দেখা যায় প্রায় সব জমির আমন ধানের গাছে ব্যাপকভাবে মাজরা পোকা আক্রমণ করেছে। মাজরা পোকার আক্রমণের কারণে অধিকাংশ ধানগাছের পাতা মরে হলুদ রং ধারণ করেছে। কোনো কোনো জমির ধানগাছ প্রায় পাতাশূন্য হয়ে মরে যাচ্ছে। মাজরা দমনে কৃষকেরা বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক ব্যবহার করেও কোনো ধরনের সুফল পাচ্ছেন না।
উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের তারাপুর এলাকার কৃষক আমিরুল ইসলাম বলেন, এবার মাঠে প্রচুর পোকার আক্রমণ দেখা যাচ্ছে। ওষুধে কাজ হচ্ছেনা। সেজন্যই আলোর ফাঁদ পেতে পরীক্ষা করা হচ্ছে। তাঁদের গ্রামের মাঠে আমন ধানের গাছে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মাজরা পোকার আক্রমণ হয়েছে। পোকা দমন করা না গেলে ধানের ফলনে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে।
উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের জোতমোড়া গ্রামের নীলের মাঠের ধানখেতে সরেজমিন দেখা গেছে, ‘ রোপন করা ধানগাছের চারায় শীষ বের হওয়া শুরু হয়েছে। আক্রমণ করেছে পোকা। মাজরাপোকায় শীষ গুলো কেটে দিছে। ফলে চারার মাথায় লালচে ভাব। কোথাও লাগানো চারা মরে গেছে। সেগুলো কৃষকরা ছিড়ে ফেলছেন। পোকার আক্রমণ রোধ করতে স্প্রে মেশিন দিয়ে কীটনাশক ছিটাচ্ছেন কৃষক। কেউ কেউ আবার নিড়ানির কাজ করছেন।
উপজেলা উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, আবহাওয়াজনিত কারণে পোকার আক্রমণ বেশি। কৃষকদের অতিরিক্ত ও ভুল স্প্রে ছিটানোর কারণে পোকামাকড় আরো শক্তিশালী হচ্ছে। সেজন্য আলোর ফাঁদ পেতে কোন কোন পোকা আছে, তা নির্নয় করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবাশীষ কুমার দাস করেন, আবহাওয়া কারণে কিছুটা মাজরা পোশার দেখা দিচ্ছে। কৃষি অফিস থেকে অফিসার পাঠিয়ে মাজরা দমনে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মাজরা পোশা সনাক্তে মাঠ গুলোতে আলোক ফাঁদের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এবছর উপজেলায় প্রায় ১৪ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষবাদ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০০ হেক্টর বেশি জমি।