• শুক্রবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:২৭ অপরাহ্ন

কুষ্টিয়ায় সবজি বাজারে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস

মাহমুদ শরীফ / ২৭ Time View
Update : রবিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

কুষ্টিয়া জেলার সর্বত্র সবজি বাজারের যেন আগুন লেগেছে। শহর ও গ্রামের বিভিন্ন হাট-বাজারে মধ্যবিত্ত ও নি¤œ শ্রেণীর মানুষদের সবজি খাওয়া এখন অনেকটাই দুঃস্বপ্ন। ক্রেতাদের সবজি কিনতে উঠেছে নাভিশ্বাস। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এই দাম বৃদ্ধিও হোতা। তারা সব কিছুর দাম বাড়ছে এমন কথাকে পুঁজি করে দাম বাড়াচ্ছে। সরকারের বাজার তদারকি কাজে আসছেনা।
সরেজমিনে বিভিন্ন ঘুরে দেখা গেছে, কুমারখালী, খোকসা বাজারে সবজি বিক্রয় দামের আগুন লেগেছে, টমেটো প্রতি কেজি ১২০ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ৮০ টাকা, শশা ৭০/৮০ টাকা কেজি, পালং শাক প্রতি কেজি ৮০ টাকা, মুলা কেজি ৫০ টাকা, গোল আলু কেজি ৪৫/৫০ টাকা, কাঁচা কলা প্রতি হালি ২০/২৫ টাকা, ওল প্রতি কেজি ৮০ টাকা, পটল ৭০-৮০ টাকা, করলা ৮৫ টাকা, লাউ প্রতিটি ২৫-৪০ টাকা, পিয়াজ প্রতি কেজি ৮০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, রশুন প্রতি কেজি ২২০ টাকা, মুখি কচু ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কর্প জাতীয় ছোট/মাঝারী পোনা ২২০ টাকার নিচে নেই। এদিকে ইলিশের ভরা মৌসুম হলেও ইলিশ কিনে খাওয়ার সামর্থ নিম্ন আয়ের মানুষদের দুঃস্বপ্নে পরিনত হয়েছে। কেজিতে ৩-৫টি ইলিশের দাম এখন ৬-৭ শত টাকা বিক্রি হচ্ছে।
কুমারখালী শহরের বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম বলেন, দেশের মধ্যে সবজি আবাদে কুষ্টিয়া অন্যতম, সেইখানে সবজির যদি এত দাম হয় তাহলে সাধারণ মানুষ কিভাবে জীবন যাপন করবে? বাজারে এলে হতাশ হচ্ছে সবাই।
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শাজাহান সিরাজ বলেন, সবজি কেনা তো ছেড়েই দিয়েছি। ডাল আর তেল ছাড়া কিছুই কিনছি না। এত দামের সবজি কী আর কেনার জো আছে!
খোকসা পৌরসভার বাজারে কথা হয় কলেজ শিক্ষক ওয়াজেদ আলীর সাথে। তিনি বলেন, সবজির বাজারে যেন আগুন লেগেছে। এত দাম! ভাবতেই পারছি না। তিনি জানান, পাইকারি ক্রয় ও খুচরা বিক্রয়ের মধ্যে মূল্যের সমন্বয় নেই। স্থানীয় প্রশাসনের বাজার মনিটরিং করা খুব জরুরি বলে আমি মনে করি।
কুমারখালী পৌর বাজারের ব্যবসায়ী লাল্টু শেখ বলেন, আমরা পাইকারী যেমন ক্রয় করি, তেমনি বিক্রি করি। আড়ৎদাররা জানান, বিভিন্ন কারনে সরবরাহ কম থাকায় সবজির দাম বেড়েছে। তবে বাজার ঘুরে সবজির সংকট দেখা যায়নি।
কুমারখালী উপজেলার আজাদ শেখ, আমিরুল ইসলাম. আকবর আলী সারা বছর সবজি চাষ করে। তারা জানায়, আড়তে আমরা যে দামে সবজি বিক্রি করি, তার থেকে কেজিতে ১৫/২৫ টাকা বেশি বিক্রি করে খুচরা বিক্রেতারা। আমাদের লাভ এই মধ্যস্বত্বভোগীরা খেয়ে নিচ্ছে। আবার আড়ৎদারের লাগামহীন কমিশন তো আছেই! খাজনার নামে চলছে চরম অরাজকতা। চাষীরা আরো জানায়, সার কীটনাষক আর শ্রমিকদের মজুরী বেড়েছে। ব্যয় করা টাকা সবজি বেঁচে ঘরে তোলা কঠিন হয়ে গেছে।
এব্যাপারে কুমারখালী সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আমিরুল আরাফাত জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মিটিং করা হয়েছে। খুব শিগগিরই সবজি বাজার মনিটরিং জোরদার ও অচিরেই অভিযান পরিচালনা করা হবে।
কুষ্টিয়া জেলা ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সুচন্দন মন্ডল এবিষয়ে জানান, চারিদিকে সব কিছুর দাম বেড়ে যাচ্ছে আর এটা সবার কানে আসছে। এটাকে পুঁজি করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দাম বাড়াচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আজও আমরা কুষ্টিয়ার বড় বাজারে আলুর বাজারে অভিযান চালিয়েছি। যেখানে আলু বিক্রি হচ্ছিল ৫০ টাকা দরে, আমাদের অভিযানের পর এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা কেজি। আমাদের এই অভিযান নিয়মিত চলমান থাকবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও সংবাদ